লিংকন ‘দুঃখবিলাস’ গানটা কেন লিখেছিলেন

প্রেম, প্রত্যাখ্যান আর সংগীত—এই তিনের মিশ্রণে তৈরি হয়েছিল ‘দুঃখবিলাস’। গানটির সঙ্গে জড়িয়ে আছে আর্টসেল-এর ভোকাল লিংকনের এক ব্যক্তিগত গল্প, যা আজও অনেক শ্রোতার হৃদয়ে দাগ কেটে আছে।

বাংলাদেশের ব্যান্ডসংগীতের ইতিহাসে নব্বইয়ের দশক গুরুত্বপূর্ণ সময়। অর্থহীন, ক্রিপ্টিক ফেইট, আর্টসেল, নেমেসিস, শিরোনামহীনসহ জনপ্রিয় ব্যান্ডগুলো এই সময় নিজেদের পরিচিতি গড়ে তোলে। শ্রোতা তৈরি করতে ও নিজেদের অবস্থান শক্ত করতে তখন ব্যান্ডগুলোর জন্য ‘মিক্সড অ্যালবাম’ ছিল গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম।

আর্টসেল-এর শুরুতেও ছিল ‘মিক্সড অ্যালবাম’-এর ভূমিকা। ‘অদেখা স্বর্গ’ গানটি তাঁরা করেছিলেন ২০০১ সালে প্রকাশিত ‘ছাড়পত্র’ অ্যালবামের জন্য। এরপর ২০০২ সালে ‘অনুশীলন’ অ্যালবামে প্রকাশিত হয় লিংকনের লেখা ও কণ্ঠে গাওয়া ‘তোমরা কেউ কি দিতে পারো প্রেমিকার ভালোবাসা?’ গানটি, যা পরে শ্রোতাদের হৃদয়ে স্থায়ী আসন করে নেয়।

লিংকন বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন গানটির পেছনের গল্প। জীবনের এক পর্যায়ে কারও প্রতি অনুভূতি জন্মেছিল, কিন্তু ভালোবাসার সেই প্রজাপতি গায়ে বসলেও প্রেম হয়ে ওঠেনি। নিজের কথায়, ‘কী করব, দেখতে মোটাটোটা তো। হইল না, কিছু করার নাই।’ এই ব্যর্থতার কষ্ট থেকেই জন্ম নেয় গানটি।

গানটির কথায় ফুটে ওঠে একাকিত্ব ও হারানোর বেদনা—‘ও আমায় ভালোবাসেনি/ অসীম এ ভালোবাসা ও বোঝেনি’। সেই অনুভূতি থেকেই লিখেছিলেন, ‘এত ভিড়েও আজও আমি একা/ মনে শুধু যে শূন্যতা/ আঁধারে যত ছড়াই আলো/ সবই আঁধারে মেলায়।’ যাঁকে উদ্দেশ্য করে গানটি লেখা, তিনি কি কোনো প্রতিক্রিয়া দিয়েছিলেন? না, কিছু বলেননি, ফিরেও আসেননি।

তবে সময় বদলায়, মানুষ বদলায়। জীবনের পরবর্তী অধ্যায়ে নতুন ভালোবাসায় সঙ্গী পেয়েছেন লিংকন। প্রেমের কষ্টে লেখা গানটিও সময়ের সঙ্গে পেয়েছে নতুন অর্থ। এখন আর সেই শূন্যতা নেই—লিংকন ভালোবেসেই ঘর বেঁধেছেন, জিতে নিয়েছেন প্রেমিকার ভালোবাসা।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

কপিরাইট © কাদামাটি বিডি সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | Newsphere by AF themes.